এক মিনিটের রাগ প্রস্তাব
১৯৪৩। লাট
সাহেবদের জন স্বাস্থ্য বিভাগ একটি সংখ্যা জানালেন। ১৮৭৩৭৪৯। তারপর সেই সংখ্যা থেকে একটি গড় সংখ্যা
বিয়োগ করে দিয়ে বললেন, আসলে হল, ৬৮৮৮৪৬, হাতে রইল পেনসিল। দুর্ভিক্ষে মাত্তর এই কজন মারা গেছে। বাকিটা ফি বছর এমনিই টেঁসে যায়। তোমরা খপর রাকো না। আমরা হলাম গিয়ে দুর্ভিক্ষ কমিশন। আমরা সব জানি।
টিম ডাইসন এবং অরূপ মহারত্ন (দি ডেমোগ্রাফি অফ
ফেমিনস) এই ব্যাপারটা নিয়ে একটু গবেষনা করে দেখলেন হিসেবে বেজায় গরমিল। দুর্ভিক্ষে
মৃতের সংখ্যা অন্তত ২১০০০০০। একুশ লাখ। পরবর্তি সময়ে অমর্ত্য সেন হিসেব করে বলেছেন
উঁহু, সংখ্যাটা ৩০০০০০০। তিরিশ লাখ।
ঐতিহাসিক পল গ্রিনো (প্রসপারিটি এন্ড মিসারি ইন
মডার্ন বেঙ্গল) আবার এরই মধ্যে বলে বসেছেন, ফেমিন কমিশনের কাছে ‘আসল’
সংখ্যাতত্ত্ব ছিল। ওঁরা চেপে গেছেন। এই
আসল সংখ্যাটি (৩১০০০০০, একত্রিশ লাখ) অনেক পরিশ্রম করে প্রস্তুত
করেছিলেন প্রশান্ত মহলানবিশ (মর্টালিটি ইন বেঙ্গল)। মহলানবিশের সার্ভের উপর ভিত্তি
করে পল গ্রিনো –র হিসেব দাঁড়িয়েছিল ৩৫ থেকে ৩৮ লাখ।
গোটা ভারতবর্ষে সেই সময় (১৯৪২) মৃত্যুর হার ছিল ২.১ শতাংশ। বাংলার আলাদা
করে কোন উল্লেখ ছিল না। মর্টালিটি
রেট ৬.৫ শতাংশ ধরেই মহলানবিশ তাঁর হিসেব পেশ করেছিলেন। (আর প্রসঙ্গান্তরে বলে রাখি, এ বছর এভারেস্ট
বিজয়ে গিয়ে বাংলার মৃত্যুর হার ৩৩.৩৩ শতাংশ) তবে একটা কথা সত্যি, ৩০ হোক বা ৩৫, এই গণিতে অপুষ্টিতে
মৃতের মাথা গোনা হয় নি। ধরলে, সেই সংখ্যা এসে দাঁড়ায় ৫৪০০০০০। চুয়ান্ন লাখ। এই গোটা
মাস মার্ডারের অধ্যায়টা দ্বায়িত্ব নিয়ে একাই লিখেছিলেন উইনস্টন চার্চিল ( বিষদে
জানতে মধুশ্রী মুখোপাধ্যায় এবং জনম মুখোপাধ্যায় পড়তে হবে)।
১৯৫৩। রানী এলিজাবেথ
মুকুট পড়ছেন। পাশাপাশি দাঁড়িয়ে আছেন উইনস্টন চার্চিল
এবং ইন্দিরা গান্ধী। চার্চিল
শুধোলেন, তোমার বাবাকে খুব কষ্ট দিয়েছি বলে তুমি
নিশ্চয়ই ব্রিটিশদের খুব ঘেন্না কর? মুচকি হেসে
ইন্দিরা উত্তর দিলেন, না না , কোনদিনই আমরা আপনাদের ঘৃণা করিনি।
হাও কিউট!
চলুন, এক মিনিটের
রাগ প্রস্তাব করলাম। শোক তো সবসময়ই
করছেন। তবে সুগার আর পেসার থাকলে রাগ করবেন
না। মর্টালিটি রেট বেড়ে যাবে।
photo courtesy: yourstory.com
Comments