Posts

Showing posts from June, 2021

লকডাউন স্বগতোক্তি ৪ - স্টেলমেট

Image
দাবা খেলাটা কোনোদিনই খুব ভাল খেলতে পারতাম না। বুদ্ধিমাণ, বিচক্ষণ, ধৈর্যশীল, দূরদৃষ্টি সম্পন্ন মানুষের মত সুচতুর কৌশলী পদক্ষেপ ধারাবাহিকভাবে করে যাওয়া, আর যার হোক এ অধমের কম্মো নয়। এই সত্য অনেক ছোটবেলাতেই  হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছিলাম।  লকডাউনে সেই সত্য আবার মনে করিয়ে দিল কম্পিউটার। স্টকফিশ লেভেল থ্রি-র সঙ্গে হেবি ফাইট করেও শেষমেশ সেই স্টেলমেট।  বিপক্ষকে ক্ষমতাশূণ্য করে দিয়েও জেতা হল না।  অনেকটাই ঠিক জীবনের মত।  আচ্ছা স্টেলমেটই যদি সারসত্য তাহলে খেলছি কেন এই খেলা?  একদিন ঠিক চেকমেট হবে, এই আশায়? নাকি, জীবনের শেষে স্টেলমেট অনিবার্য জেনেও খেলতে হয়?   

পর্বতারোহণঃ একটি ছিন্নডানা স্বপ্ন - দ্বিতীয় পর্ব

Image
পর্বতারোহণঃ একটি ছিন্নডানা স্বপ্ন - দ্বিতীয় পর্ব  অনিন্দ্য মুখোপাধ্যায়  (লেখকের মন্তব্যঃ এই লেখাটি দেশ পত্রিকায় ২০২১ সালের জানুয়ারি মাসে প্রকাশিত হয়েছিল। সম্পাদকের অনুমতি নিয়ে এবার নিজের ব্লগে দুটি পর্বে প্রকাশ করলাম। এটি  দ্বিতীয় পর্ব। কৃতজ্ঞতা এবিপি প্রাইভেট লিমিটেড। ) প্রথম পর্বের লিংক ৫ বিশ্বের প্রেক্ষাপটে পর্বতারোহণের সেই প্রতীক্ষিত উত্তরণের অধ্যায় শেষ পর্যন্ত না আসার কারণটা অবশ্য বাংলা কিংবা ভারতের মাটিতে বেনো জল ঢোকার মতো সরল নয়। বিষয়টি যেহেতু অনেকটাই ইতিহাসনির্ভর তাই এডওয়ার্ড হোয়াইম্পার এবং ম্যাটারহর্ন পাহাড়ের প্রসঙ্গ আসা অবশ্যম্ভাবী । ১৮৬৫ সালে হোয়াইম্পারের নেতৃত্বে ম্যাটারহর্ন শিখর আরোহণকেই ইতিহাসকাররা মোটামুটি ভাবে ইওরোপিয়ান অ্যাল্পিনিজম তথা পর্বতারোহণের জন্মলগ্ন হিসেবে ধরে থাকেন। সেই আরোহণের পর এডওয়ার্ড হোয়াইম্পার লিখেছিলেন, “পৃথিবী আমাদের পদতলে ছিল এবং ম্যাটারহর্নকে আমরা জয় করে ফেলেছিলাম” । আজকাল বেশ কিছু পর্বতারোহী বন্ধু (তাদের মধ্যে ভারতীয় প্রায় নেই বললেই চলে) অবশ্য বলে থাকেন, তাঁরা আর সামিটে দাঁড়িয়ে পতাকা ওড়ানোর ধার ধারেন না। তাঁদের কাছে আরোহণের বিশুদ্ধতাটাই মোক্ষ।

পর্বতারোহণঃ একটি ছিন্নডানা স্বপ্ন- প্রথম পর্ব

Image
পর্বতারোহণঃ একটি ছিন্নডানা স্বপ্ন -(প্রথম পর্ব) অনিন্দ্য মুখোপাধ্যায় (লেখকের মন্তব্যঃ এই লেখাটি দেশ পত্রিকায় ২০২১ সালের জানুয়ারি মাসে প্রকাশিত হয়েছিল। সম্পাদকের অনুমতি নিয়ে এবার নিজের ব্লগে দুটি পর্বে প্রকাশ করলাম। এটি প্রথম পর্ব। কৃতজ্ঞতা এবিপি প্রাইভেট লিমিটেড। )  ১ পঞ্চাশের দশকের শেষ দিকে , ইওরোপ - আমেরিকার পাহাড়িয়া আড্ডায়, পোড় খাওয়া এবং পোড় খেতে উদ্‌গ্রীব পর্বতারোহীদের মুখে মুখে একটা আলোচনা খুবই শোনা যেত । আল্পসের শামোনি কিংবা ওয়েলসের প্লাস - ই - ব্রেনিন , মাল্টি - পিচ কিংবা কোনও বোল্ডারিং সমস্যার শেষে , গ্রামের শুঁড়িখানায় বিয়ারের গ্লাসে ফেনার মতোই উপচে পড়ত একটা সম্ভাবনার কথা । শোনা যেত , হিমালয় এবং কারাকোরামের উচ্চতম সবক’টি পাহাড় আরোহণ হয়ে গেলেই , পর্বতারোহণের ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায় শুরু হবে । বলা হত , তখন আর হাল্লা-চলেছে-যুদ্ধের কায়দায় বিশাল আকার - প্রকারের অভিযান সংগঠিত হবে না । তখন কেবল গুটিকয় বন্ধু, পেল্লায় স্যাক কাঁধে তুলে নিয়ে, অপেক্ষাকৃত ছোট পাহাড়ে, কঠিনতর ক্লাইম্বিং চ্যালেঞ্জের সন্ধানে পাড়ি দেবে। স্নোডনিয়া, লেক ডিস্ট্রিক্ট, কানাডিয়ান রকিস, সিয়েরা ক্যাসকেডস থেকে জ

বিকাশের অসুখ

Image
বিকাশের অসুখ  অনিন্দ্য মুখোপাধ্যায়  ২০১৩। সম্ভবত জুন কিংবা জুলাই। তারিখটা সঠিক মনে পড়ছে না এই মুহুর্তে। আসলে হয়ত মনে করার জন্য প্রয়োজনীয় পরিশ্রমটুকুও করতে রাজি নই আমি আজ। দিন, মাস, কিংবা তারিখে কিই বা আসে যায়? বিশেষত, যখন সেই দিন আমি এবং আমার সঙ্গীরা কেউই মারা যাই নি। বহাল তবিয়তে দিব্যি বেঁচে আছি আজও। মারা গেলে অবশ্য, সেই দিন, মাস, কিংবা বছর; কিছু মানুষের কাছে মন খারাপের বিষয় হয়ে উঠত। কয়েক বছরের জন্য হলেও, হত। শোক সাময়িক, উচ্ছ্বাস তাৎক্ষণিক, এবং আনন্দ চিরন্তন। তবে স্মৃতি সিলেক্টিভ অ্যামনেসিয়ায় ভোগে। পছন্দের জিনিষ ঠিক মনে থাকে। বাকি সব কিছু, কিছু দিনের। তাই ইতিহাস পড়া হয়। শেখা হয় না। এই আমাদের রক্তশূন্য সভ্যতা। প্রতিদিন ঘুম ভাঙে মিথ্যা এবং প্রবঞ্চনায়। চোখ বুজি স্তোকবাক্যে। সভ্যতার গল্পে আজকাল বিশ্বাস হয় না আর। যাই হোক, সেই বছর উত্তরাখণ্ডে ক্লাউড বার্স্ট হয়েছিল। ‘ক্লাউড বার্স্ট’-ঘন কালো বিদ্যুৎ চমকানো মেঘের মত একটা নাম। বার্স্ট, অর্থাৎ, বিস্ফোরণ। বাংলা ভাষায় কেউ মেঘ ফেটেছে না বললেও, হিন্দিতে ‘বাদল ফাট গয়া’, বলা হয়। যেকোনো বিস্ফোরণের মধ্যেই, তা সে টেররিস্টের হোক, কিংবা প্রকৃতির; একটা চম