Posts

Showing posts from 2016

সকলের জন্য বই

Image
শিশুটি বলেছিল, এমন একটা দিন আসবে যেদিন এই পৃথিবীর সকলের হাতে একটি বই থাকবে। এমন একটি বই, যার পাতা ওলটালে, প্রত্যহ, প্রত্যেকে নিজের ছবি দেখতে পাবে। সেই বইয়ের মধ্যে পাঠকের সুখ, দুঃখ, আশা, হতাশা, জন্ম, মৃত্যু হুবহু ফুটে উঠবে। একটিই বই সকলের জন্য। অথচ সকলেই ভাববে এটি তার একান্ত নিজস্ব। সকলেই তাকে নিজের মত করে মলাট দেবে, মনের মত করে সাজাবে। সবাই মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে থাকবে। ওয়ান বুক টু বাইন্ড দেম অল। ওয়ান বুক টু রুল দেম। শুনে পাদ্রী তড়াক করে লাফিয়ে উঠে বলেছিলেন, আমি জানি তুমি কোন বইয়ের কথা বলছ বালক। মৌলবী সাহেব দাড়ি নেড়ে বলেছিলেন, ওহে পাদ্রী তুমি ভুল। তোমার ঐ বইটি আর চলে না। আমি জানি ওর ঠিক কোন বইটির প্রয়োজন। পণ্ডিত মশায় টিকিতে ওভারহ্যান্ড নট বাঁধতে গিয়ে স্মিত হেসে বলেছিলেন, কেউ কিস্যু জানে না। আমারটাই সর্ব শ্রেষ্ঠ।  শিশুটি সবাইকে চুপ করিয়ে দিয়ে হেসে উঠেছিল। তারপর বলেছিল, ধুর বোকার দল, আমি তো ফেসবুক-এর কথা বলছিলাম। অনিন্দ্য মুখোপাধ্যায় (লেখকের মন্তব্যঃ আসলে শিশুটির স্বপ্ন শেষমেশ ফেসবুকে এসে ঠেকার মধ্যে একটা প্রেডিক্টেবিলিটি আছে। তাই কারো মনে হতেই পারে লেখাটা একটু জোলো।

এক মিনিটের রাগ প্রস্তাব

Image
১৯৪৩ । লাট সাহেবদের জন স্বাস্থ্য বিভাগ একটি সংখ্যা জানালেন । ১৮৭৩৭৪৯ । তারপর সেই সংখ্যা থেকে একটি গড় সংখ্যা বিয়োগ করে দিয়ে বললেন , আসলে হল , ৬৮৮৮৪৬, হাতে রইল পেনসিল। দুর্ভিক্ষে মাত্তর এই কজন মারা গেছে । বাকিটা ফি বছর এমনিই টেঁসে যায় । তোমরা খপর রাকো না। আমরা হলাম গিয়ে দুর্ভিক্ষ কমিশন। আমরা সব জানি।  টিম ডাইসন এবং অরূপ মহারত্ন (দি ডেমোগ্রাফি অফ ফেমিনস) এই ব্যাপারটা নিয়ে একটু গবেষনা করে দেখলেন হিসেবে বেজায় গরমিল। দুর্ভিক্ষে মৃতের সংখ্যা অন্তত ২১০০০০০। একুশ লাখ। পরবর্তি সময়ে অমর্ত্য সেন হিসেব করে বলেছেন উঁহু, সংখ্যাটা ৩০০০০০০। তিরিশ লাখ। ঐতিহাসিক পল গ্রিনো (প্রসপারিটি এন্ড মিসারি ইন মডার্ন বেঙ্গল) আবার এরই মধ্যে বলে বসেছেন, ফেমিন কমিশনের কাছে ‘ আসল ’ সংখ্যাতত্ত্ব ছিল। ওঁরা চেপে গেছেন।   এই আসল সংখ্যাটি ( ৩১০০০০০ , একত্রিশ লাখ ) অনেক পরিশ্রম করে প্রস্তুত করেছিলেন প্রশান্ত মহলানবিশ (মর্টালিটি ইন বেঙ্গল)। মহলানবিশের সার্ভের উপর ভিত্তি করে পল গ্রিনো –র হিসেব দাঁড়িয়েছিল ৩৫ থেকে ৩৮ লাখ।  গোটা ভারতবর্ষে সেই সময় ( ১৯৪২ ) মৃত্যুর হার ছিল ২ . ১ শতাংশ । বাংলার আলাদা করে কো

পালে বাঘ

Image
আজ সকালে আনন্দবাজার পত্রিকা জানালেন বাংলাদেশে রামকৃষ্ণ মিশনের জনৈক সাধুকে মেরে ফেলার এবং পারলে কুচি কুচি করে কেটে ফেলার হুমকি দিয়েছে একটি জঙ্গি সংগঠন । একেবারে নিজেদের লেটারহেডে চিঠি । সকালের চা - বিস্কুটের পাশে বাঙালির আজ এটাই টপ স্টোরি । সেই খবরে নাকি ভারতবর্ষের মন্ত্রী কুলে ( মুখ্য + প্রধান ) একেবারে হুলুস্থুল পড়ে গেছে । না , আনন্দবাজার আমাদের পিছিয়ে পড়তে একেবারেই দিচ্ছেন না । ধর্মীয় সুড়সুড়ি দিয়ে কপি ছাড়ার সুযোগ তাঁরা ছাড়েন নি ।   এটা ঠিকই যে বাংলাদেশে বিগত চার বছরে ২০ জনের বেশী মানুষ এই ধরণের ধর্মীয় হিংসার বলি হয়েছেন । তাঁদের কেউ ছিলেন ব্লগার , কেউ অধ্যাপক , কেউ সঙ্খ্যালঘু সম্প্রদায়ের এবং কেউ বিদেশী । পুলিশ এবং প্রশাসন কোনও দিক থেকেই এই সমস্যাটি সমাধানের সদিচ্ছা প্রমাণিত হয় নি । ধর্ম যখন দেশ শাসনের যন্ত্র তখন এরকমটাই হয়ে থাকে । গুজরাত কিংবা মুজফফরনগরের দিকে খোলা চোখে তাকালেই ব্যাপারটা স্পষ্ট হয়ে যাবে । ধর্ম আসলে আমাদের অন্ধ করে দিয়েছে । তাই চোখ খুলেও কিছু দেখতে পাচ্ছি না ।   তবে , রামকৃষ্ণ মিশনের সাধুদের প্রাণের ভয় নেই । তাঁরা তো বৈদান্তিক । নশ্বর মনুষ

গতি, স্থিতি ও পোগোতি

Image
দুন এক্সপ্রেস দুলছিল । সেই দুলুনিতে সে চলছে না থেমে আছে বোঝার উপায় ছিল না । গতি এবং স্থিতির বোধ ছিল না । আমিও জেগে আছি না ঘুমিয়ে তা বুঝতে পারছিলাম না । সেই মুহুর্তে , সেই গতি - স্থিতির জোট আদপে একটা সমস্যা , না পরিস্থিতি , তাও বুঝতে পারছিলাম না । ব্যাপারটা সমস্যা হয়ে থাকলে তার একটা সমাধান করা দরকার , এমন কোন তাগিদও ছিল না । একটা চরম আলস্য কাজ করছিল । অলসেরা যখন কাজ করে না , তখন আলস্য কাজ করে ।   আমার পাশের বার্থে নাক অবধি কম্বল চাপা দিয়ে শুয়ে থাকা বিজ্ঞানী বললেন , রেস্ট আর মোশন , কোনটাই অ্যাবসলিউট নয় । কেবলই ফ্রেম অফ রেফারেন্স । বুঝলে ? না , বলতে গেলেও ঘাড় নাড়তে হবে , আর সেটাও একটা কাজ । চরম আলস্যে সেটাও চেপে গেলাম । যেই ‘ না ’ বলব , অমনি বোঝাতে আরম্ভ করবে । তখন আবার না বুঝেও বুঝেছি বলতে হবে । খুব চাপ । বাপরে বাপ । তার চেয়ে থাকো চুপচাপ ।   এখন , আমি আর একটা মৃতদেহে কোনও পার্থক্য নেই । ভাগ্যিস বিজ্ঞানীর কথা না শুনতে পাওয়ার ভান করেছি ! জেনে ফেললেই বিপদ ! তখন ট্রেন কেন চলছে না , এই বলে যদি প্রবল আন্দোলন শুরু করি ? বিস্তর খাটনি বেড়ে যাবে যে ! পুলিশ আসবে , প