সকলের জন্য বই


শিশুটি বলেছিল, এমন একটা দিন আসবে যেদিন এই পৃথিবীর সকলের হাতে একটি বই থাকবে। এমন একটি বই, যার পাতা ওলটালে, প্রত্যহ, প্রত্যেকে নিজের ছবি দেখতে পাবে। সেই বইয়ের মধ্যে পাঠকের সুখ, দুঃখ, আশা, হতাশা, জন্ম, মৃত্যু হুবহু ফুটে উঠবে। একটিই বই সকলের জন্য। অথচ সকলেই ভাববে এটি তার একান্ত নিজস্ব। সকলেই তাকে নিজের মত করে মলাট দেবে, মনের মত করে সাজাবে। সবাই মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে থাকবে। ওয়ান বুক টু বাইন্ড দেম অল। ওয়ান বুক টু রুল দেম।

শুনে পাদ্রী তড়াক করে লাফিয়ে উঠে বলেছিলেন, আমি জানি তুমি কোন বইয়ের কথা বলছ বালক। মৌলবী সাহেব দাড়ি নেড়ে বলেছিলেন, ওহে পাদ্রী তুমি ভুল। তোমার ঐ বইটি আর চলে না। আমি জানি ওর ঠিক কোন বইটির প্রয়োজন। পণ্ডিত মশায় টিকিতে ওভারহ্যান্ড নট বাঁধতে গিয়ে স্মিত হেসে বলেছিলেন, কেউ কিস্যু জানে না। আমারটাই সর্ব শ্রেষ্ঠ। 

শিশুটি সবাইকে চুপ করিয়ে দিয়ে হেসে উঠেছিল। তারপর বলেছিল, ধুর বোকার দল, আমি তো ফেসবুক-এর কথা বলছিলাম।

অনিন্দ্য মুখোপাধ্যায়

(লেখকের মন্তব্যঃ আসলে শিশুটির স্বপ্ন শেষমেশ ফেসবুকে এসে ঠেকার মধ্যে একটা প্রেডিক্টেবিলিটি আছে। তাই কারো মনে হতেই পারে লেখাটা একটু জোলো। আমারও মন চাইছিল, শিশুটি এমন কিছু বলুক যাতে এই ধর্মান্ধ দুনিয়া একটু নাড়া খায়। কিন্তু, শিশুটি তেমন কিছু বলেনি। কারন, কেউ তেমন কিছু বলে, বা, করে উঠতে পারেন না আজকাল। হাতে পড়ে থাকে ফেসবুক।

আমার কাছে আসলে এই প্রেডিক্টেবিলিটি-টাই একটা চরম পরিহাস, একটা স্যাড রিয়ালিটি মনে হয়েছে। এর থেকে দুঃখজনক আর কিই বা হতে পারে! বিশেষ করে যেখানে অনেক সম্ভাবনা লুকিয়ে ছিল! )

 image courtesy:ratracetrap.com

Comments

Popular posts from this blog

Across The Sahara on a Bicycle

To the Mountains of the Moon: A Journey from Fiction to Facts

Straight from a Story Book: Part I