Saturday, July 23, 2022

অনেক কিছুর জন্যই কৃতজ্ঞ, তবে কফির জন্য বিশেষ করে

মাঝেমাঝে রাতে-র ঘুম ভাঙার আগেই আমি জানলার পাশে এসে দাঁড়াই। মনে হয় একটানা অনেকক্ষণ গভীর হবার পর একসময় ফিকে হতে হয় রাতকেও। তখন তার মধ্যে এক প্রশান্ত নীরবতা কাজ করে। কখনোসখনো, সেই নীরবতার মধ্যে এক অদ্ভুত উচ্চতা খুঁজে পাই আমি। তখন তাকে খুব পরিচিত মনে হয়।  মনে হয়, কেবল পাহাড়ের চুড়াতেই, এই উচ্চতাকে অনুভব করেছি আমি। কিন্তু বেলুড়ের গঙ্গার ধারের এই ভাঙা জানলায়, মাঝেমাঝে সেই উচ্চতা নেমে আসে কী করে? মুগ্ধ বিস্ময়ে আমি হতবাক হয়ে যাই। 

আসলে জীবনের প্রতি মুহূর্তে একটা উচ্চতা খুঁজে চলি আমি। একেবারে নাছোড়বান্দার মত। তাই হয়ত একটু বিরক্ত হলেও, সে আমার জানলায় দেখা দিয়ে আবার কোথায় যেন চলে যায় এক অন্যমনস্ক ব্যস্ততায়। এদিকে একটানা কিছুদিন একজায়গায় থাকলেই আমার মন অসম্ভব চঞ্চল হয়ে পড়ে। কারণ আমি জানি এই জীবন আর বেশী দিন নেই। সময় সীমিত, তাই দুচোখ ভরে দেখে নিতে চাই এই পৃথিবী, অজানা পাহাড়-নদী এবং আরও অচেনা তার মানুষকে। বিচক্ষণেরা জানিয়েছেন  এ আমার এক রোগ। সেই বিচক্ষণদের জানাই, কবি নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী  তো সেই কবেই এই ব্যাধির কথা বিস্তারে লিখে গেছেন।  (কবির ডায়াগনোসিসের লিংক এখানে দিয়ে রাখলাম- 'এরিক শিপটনের ব্যাধি'। )

তাই স্বীকার করতে দ্বিধা নেই- আমি অ্যাডভেঞ্চারেই বাঁচি। তাই, এরিক শিপটনের ব্যাধিতেই আমার মুক্তি। 

তবে সব সকালে আমার জানলায় সেই উচ্চতা খুঁজে পাইনা। তখন মগজের রিসেপটর কোষগুলোতে লেপটে শুয়ে থাকা অ্যাডিনোসিনের দলকে একটা ধাক্কা দিয়ে সরানোর প্রয়োজন হয়। তখন আমি খোঁজ করি এমন একটা অ্যালকালয়েডের, যে আমার রক্তে মিশে যাবে। একই রকম দেখতে বলে, মস্তিষ্কের রিসেপটর কোষগুলো অ্যাডিনোসিন ভেবে হাত মেলাবে তাদের সঙ্গে। ব্যস, ঘুম পাড়ানি অ্যাডিনোসিন গুলোকে সরিয়ে তাদের জায়গা নেবে ক্যাফিন। আমার সেন্ট্রাল নার্ভাস সিস্টেম এবার সজাগ হয়ে উঠবে। নিজের শরীরের সঙ্গে এ এক প্রাত্যহিক প্রবঞ্চনা। অ্যাড্রেনালিন অবশ্য বলবে, যাক বাবা, বাঁচালে! ভাগ্যিস ক্যাফিন ছিল। একা আর কতদিক সামলাব?

থ্যাংক ইউ গড ফর কফি!  



No comments:

Discovering Ladakh’s Uncharted Petroglyphs : A Short Note

  Whispers on Stone: Discovering Ladakh’s Uncharted Petroglyphs We were trudging down a dusty trail by the frozen stream near the little v...